হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার মধ্যে একটি বৈঠকে হয়েছে। হাসিমুখে শুরু হলেও অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠকটি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেন ট্রাম্প। অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে এক ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বিমান উপহারের কথা বলে হাস্যরসাত্মক মুহূর্তে অবতারণা করেন রামাফোসা।আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২১ মে) ওভাল অফিসে এক হাস্যরসাত্মক মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলেন, ‘দুঃখিত, আপনাকে উপহার দেয়ার মতো আমার কাছে কোনো বিমান নেই।’
দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও মধ্যাহ্নভোজের সময় রামাফোসা ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে এ কথা বলেন।রামাফোসার কথার জবাবও হাস্যরসাত্মক ভাবেই দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেন, ‘ইচ্ছা করলেই নিতাম। যদি আপনার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীকে একটি প্লেন দিত, আমি সেটা নিয়ে নিতাম।’
দুই প্রেসিডেন্টের এমন কথোপকথন মজার ছলে হলেও এর পেছনে রয়েছে একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রেক্ষাপট। সম্প্রতি কাতারের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল বিমান উপহার পাওয়া ইস্যুতে কিছুদিন ধরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে বিমান উপহারের ট্রাম্পের দাবিকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছে সংশ্লিষ্ট ৪টি সূত্র, এমন খবরও প্রচারিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। চলমান বিতর্কের মধ্যে কাতারের কাছ থেকে বিমানটি উপহার হিসেবে পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে, মাকিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বোয়িং ৭৪৭ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যবহারের জন্য এটিকে নিরাপদ করতে কাজ চলছে। পেন্টগনের মুখপাত্র সিন পার্নেল দাবি করেন, মার্কিন ফেডারেলের নিয়মনীতি মেনেই এই উপহার গ্রহণ করা হয়েছে।
বিমান উপহার পাওয়া নিয়ে মার্কিন রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে তুমুল বিতর্ক। ডেমোক্র্যাটরা তো বটেই, অনেক রিপাবলিকানও এর বিরোধিতা করছেন। আইনগতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাতারের কাছ থেকে উপহার পেতে পারেন কি না এই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন এটি স্বার্থের সংঘাত এবং কাতারের সঙ্গে মার্কিন অস্ত্রচুক্তির ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।
যদিও এ নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে ট্রাম্প ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সাংবাদিককে উদ্দেশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘তুমি একজন বোকা। তুমি কী ধরনের সাংবাদিক! তোমার সাংবাদিক হওয়ার যোগ্যতা নেই, তুমি যথেষ্ট বুদ্ধিমান না।’